আগেরকার আমলে আমরা দেখেছি বাড়ির চারদিকে বিরাট আকৃতির বটবৃক্ষ ছাড়াও কড়ই, তাল, আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু প্রভৃতি গাছ। কিন্তু মানুষ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সেই সব বড় বড় গাছ কেটে ফেলছে। একশ্রেণির বৃক্ষ নিধনকারীর হাত থেকে গাছ যেন কোনোভাবেই রক্ষা পাচ্ছে না। ইটের ভাটার জলন্ত আগুনে পুড়ছে আজ বৃক্ষ। একদিকে দেশি প্রজাতির গাছগাছালি যেমন হারিয়ে যাচ্ছে তেমনি ভিন্নদেশি গাছ লাগানো হচ্ছে বেশি।
একটু সচেতনভাবে তাকালে দেখা যাবে দেশের বড় বড় শহর ছাড়াও গ্রামীণ জনপদগুলোতে অপরিকল্পিতভাবে বিদেশি গাছ রোপণের হিড়িক পড়ে গেছে। মেহগনি, একাশিয়া, বটলপাম, উইলো, রেইনট্রি, ইউক্যালিপটাস প্রভৃতি বিদেশি গাছ দ্রুত বেড়েওঠা দেখে মানুষ এগুলোর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। কিন্তু এসব বিদেশি গাছের ভিড়ে আমাদের ঐতিহ্যের ধারক বাহক দেশি আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে শুধু দেশি ফলদগাছই হারাচ্ছে তা নয়, পরিবেশ প্রকৃতির ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। দেশের জীববৈচিত্র্যের জন্যও দেখা দিচ্ছে মারাত্মক হুমকি। মানব দেহের জন্যও বিদেশি গাছ ক্ষতিকর বলে মনে করছেন প্রাণীবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ব্যাপক হারে বিদেশি গাছ লাগানোর ফলে একদিকে দেশি পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর খাদ্যসংস্থান কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে মানব স্বাস্থ্যের জন্য সেগুলো ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ ছড়াচ্ছে। তাছাড়া এসব বিদেশি গাছ প্রচুর ভূগর্ভস্থ পানি শোষণ করে পানির স্তর আরও নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। সরকারের উচিত এদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া এবং দেশিগাছ লাগানোর ব্যাপারে প্রচারণা চালাবার জন্য বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।
যোগাযোগ করুন

No comments:
Post a Comment